আজ বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গুরুত্বপূর্ণ পদের হাতছানি

সংবাদচর্চা রিপোর্ট :

রাজনীতির মাঠে বৃহত্তম দল হিসেবে বিবেচ্যিত বিএনপি। এই দলটির নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে প্রয়াত আব্দুল মতিন চৌধুরী ছিলেন একমাত্র স্থায়ী কমিটির সদস্য। এরপর আর এই পদে এখান থেকে কাউকেই নেয়া হয়নি। এ নিয়ে এখানকার নেতাকর্মীদের মধ্যেও একটা আক্ষেপ ছিল দীর্ঘদিনের।
তবে, স্থানীয় নেতাকর্মীদের সেই আক্ষেপ এবার ঘুচতে যাচ্ছে বলেই শোনা যাচ্ছে। সূত্র বলছে, এবার নারায়ণগঞ্জ থেকে একজনকে কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে নেয়া হতে পারে। শোনা যাচ্ছে, নারায়ণগঞ্জের একজন সাবেক সংসদ সদস্যকে বিএনপির স্থায়ী কমিটি অথবা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ দেয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে রয়েছেন তিন জন। তারা হলেন, নারায়ণগঞ্জ (আড়াইহাজার)-২ আসনের আতাউর রহমান খান আঙ্গুর, নারায়ণগঞ্জ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ)-৪ আসনের মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন এবং নারায়ণগঞ্জ (সদর-বন্দর)-৫ আসনের আবুল কালাম।
সূত্র বলছে, বার্ধক্যজতিন কারণে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন সাবেক এমপি আবুল কালাম। সর্বশেষ তিনি মহানগর বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তবে, এই পদে থাকাকালিন সময়ে তার কর্মকাণ্ডে সন্তোষ ছিলেন না দলীয় হাই কমান্ড। যার কারণে পরবর্তীতে মহানগর বিএনপির কমিটিও তার হাতছাড়া হয়।
অন্যদিকে আতাউর রহমান আঙ্গুরও রাজনীতির মাঠে নিষ্ক্রিয়। তার কর্মকাণ্ডে অতীত থেকে শুরু করে বর্তমানেও দলীয় হাইকমান্ড খুশি নন। বলা চলে সাবেক এই সাংসদ রাজনীতির মাঠে পুরোপুরিভাবেই নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছেন।
এদিকে প্রভাবশালী রাজনীতিক হিসেবে খ্যাতি রয়েছে সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের। তিনি বর্তমানে জেলা বিএনপির সভাপতি। তৃণমূলের ভাষ্য মতে, তিনি এই দলটির সভাপতি হওয়ার পর থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। বলা চলে এই দলটির নেতাকর্মীরা আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছেন। তার কর্মকাণ্ডে দলীয় হাইকমান্ডও খুশি বলে জানিয়েছে দলটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা। তারা বলেন, গিয়াসউদ্দিনের কাজে হাইকমান্ড মুগ্ধ। তাকে পুরষ্কৃত করার পরিকল্পনা চলছে।
কেন্দ্রীয় এই সূত্রগুলো বলছে, নারায়ণগঞ্জে তিন জন সাবেক সংসদ সদস্য রয়েছে। তাদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন তার সাহসিকতা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিপরীতে তার বিকল্প নেই। এখানে তিনি সভাপতি আছেন বলেই অন্যান্য নেতাকর্মীরা সাহসি ভূমিকা পালন করতে পারছেন। জেলা বিএনপির মধ্যেও প্রাণের সঞ্চার এসেছে। অন্যদিকে তিনিসহ তার পুরোপরিবারই সরকারি দলের নির্যাতনের শিকার। একের পর এক মামলায় জর্জড়িত তার পুরো পরিবার। এতসব কিছুর পরও তিনি বা তার পরিবার নিষ্ক্রিয় হননি। সার্বিকভাবে দলীয় হাইকমান্ড তার প্রতি সন্তুষ্ট।
ওই সূত্রের মতে, তিন জন সাবেক সংসদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিনই যাচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে। তবে, কোন পদে যেতে পারেন তা কেউ নিশ্চিত করতে রাজি হচ্ছেন না। তারা জানিয়েছেন, হাইকমান্ড গিয়াসউদ্দিনকে যেখানে যোগ্য মনে করবেন সেখানেই দিবেন। তবে, তিনি যে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভালো একটি পদ পেতে যাচ্ছেন তা মোটামুটি নিশ্চিত করেছে ওই সূত্রগুলো। তারা বলছেন, গিয়াসউদ্দিন রাজনীতিতে অনেক অভিজ্ঞ একজন মানুষ। ভোটের কৌশল, মাঠের কৌশলে বেশ সিদ্ধহস্ত তিনি। দল গুছানোর ক্ষেত্রেও একজন দক্ষ সাংগঠনিক এই ব্যক্তি।
এদিকে বিগত কয়েকদিন ধরেই নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি বেশ আলোচনা চলছে গিয়াসউদ্দিনকে ঘিরে। দলটির অনেকেই বলছেন, গিয়াসউদ্দিন কেন্দ্রীয় বিএনপিতে স্থান পেতে যাচ্ছেন। গিয়াসউদ্দিন অনুগামি নেতাকর্মীরাও বেশ উৎফুল্ল।
প্রসঙ্গত, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে বেশ কয়েকজনকেই স্থান দেওয়া হয়েছে। তারা হচ্ছেন, মাহমুদুর রহমান সুমন (সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক) নজরুল ইসলাম আজাদ (সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক), সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন (নির্বাহী কমিটির সদস্য), মনিরুজ্জামান মনির (নির্বাহী কমিটির সদস্য), আজহারুল ইসলাম মান্নান (নির্বাহী কমিটির সদস্য), মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু (নির্বাহী কমিটির সদস্য), মামুন মাহমুদ (নির্বাহী কমিটির সদস্য) এবং শাহ্ আলম (নির্বাহী কমিটির সদস্য)।